Tuesday, October 6, 2009

একেলা - ১

মাঝ রাত, জেগে আছি, ঘুম চোখে আসেনা
ঘুমপাখি, উড়ে গেছে, নীড়ে আর ফেরে না।

কেন গেছে, কোথা গেছে, কিযে তার বেদনা,
সেই জানে, আর ও জানে, আর কেউ জানেনা।

পাটক্ষেত, কাছে টানে, আর টানে, নীল ঢেউ
বাতাসেতে, খোলা চুলে, কাছে টানে, আরও কেউ।

এত টান, তবু দূর, কতো দূর, জানি না
কিযে ভাষা, কিযে দেশ, আপনার কেউ না।

পরবাসী, পরদেশী, দুয়ে দুই, মেলে না
বরফের, দূর দেশে, আজও তাই, একেলা।

-------
লাইমেন, ০৭ ই অক্টোবর, ২০০৭

তুমি অপরের, আমি জানতাম, ভালবাসলাম তবু তোমাকে

বৃষ্টিতেই কেবল ঝরবে আমার অশ্রু
রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে রক্ত হয়ে ক্ষরবে তারা পাথরচাপা বুকের ভেতরে।

তুমি অন্যের জানি বলেই তোমাকে কখনো বলবো না।
বল্লেই বা কি?
ভিখারী এই ভিনদেশীকে তুমি কখনোই কি ভালবাসতে?

অনিশ্চিত কষ্টগুলোকে তাই লুকিয়ে রাখবো বুকের খুব ভেতরে
চিনচিনে ব্যাথাটাকে দমিয়ে রাখব না হয় কোন পেইনকিলারে।

কখ্খনো বলব না তোমাকে আমার কষ্টের কারণ
আমাকে অপমান করে আরও কষ্টের জন্ম আমি দিতে দেবোনা।
তাইতো বৃষ্টিকেই কামনা করি আমি
ও এলেই কষ্টগুলোকে ঝরিয়ে দেব
কেউ জানবে না, তুমিও না।


----
লাইমেন, ১২,০৯,২০০৭
আহা-র "ক্রায়িং ইন দ্যা রেইন" দ্বারা অনুপ্রাণিত এবং নিজের কষ্টের কারণে লিখিত।
শিরোনামখানা শিবাজী চট্টোপাধ্যায়ের একটি গান হতে নেয়া।

http://www.somewhereinblog.net/blog/borofblog/28730888

ভুল

ওটাই প্রথম ভুল।
মুগ্ধ চোখে অপলক চেয়ে
দেখেছি কেবল সব ভুলে গিয়ে
কালবৈশাখী হার মানানো
পাগল করা সে চুল।

Monday, October 5, 2009

মিথ্যে ঘুড়ি (মূল ভার্সন)

একটা সুতো ছিড়ে যাওয়া
লাল ঘুড়ির পেছনে ঘুরে
বিকেলের পর বিকেল
সন্ধ্যার পর সন্ধ্যা দৌড়ে
আমি কখন যে সব চেনা মাঠ ঘাট পেড়িয়ে চলে এসেছি
অচেনা নতুন ভূবনে,
একবারও খেয়াল করিনি।

অথচ আমি চাইলে খুব সহজেই
নতুন সুতো আর নতুন ঘুড়ি
কিনে নিতে পারতাম পাড়ার দোকান থেকে
আমার শূন্য নাটাই কবেই ভরে নিতে পারতাম
ঠিক একই রকম একটা লাল ঘুড়িতে।

কিন্তু আমার আকর্ষণ কেবল ঐ ঘুড়িটার প্রতি
তাই সব ভুলে আমি কেবল ছুটি আর ছুটি।

ভয় হয়, হয়তো এখানে সেখানে উড়তে উড়তে
শেষ পর্যন্ত ঘুড়িটা আবার ফিরে যাবে পুরনো নাটাইয়ে।
আমি তখন শূন্য হাতে একা বসে থাকবে
অচেনা শহরের নীরব মাঠের এক প্রান্তে।

মিথ্যে ঘুড়ি

(এটি মূলত মিথ্যে ঘুড়ি-র পরিবর্তিত ভার্সন। মূল কথা একই, শুধু ছন্দ যোগ করা হয়েছে)

সুতো ছিড়ে যাওয়া লালচে একটা ঘুড়ির পেছনে ঘুরে
আমি চলে গেছি চেনা পথ ছেড়ে অনেক অনেক দূরে।
বিকেলের পর বিকেল আর সন্ধ্যার পর সন্ধ্যা
তার পিছে ছুটে হয়েছে আমার আর সব কাজ বন্ধ্যা।

এখানে সেখানে বাতাসের সাথে দিক বদলায় ঘুড়ি
আমিও সাথে পথ বদলে তারই সাথে সাথে ঘুরি।
যত দূর যাও যেখানেই যাও একলা হবেনা তুমি
যতদিন তুমি একলা রয়েছ সঙ্গে রয়েছি আমি।

আমার এ কথা বুঝতে পারেনা অবুঝ হৃদয় ঘুড়ি
উল্টো হাওয়ায় পিছু ফিরে যায় এখন আমি কি করি।
পুরনো নাটাই সেখানেই যদি যাবার ইচ্ছে ছিল
এতটা পথ আমায় কেন পিছু পিছু নিয়ে এল।

আর কখনো পিছু নেবনা হারানো এমন ঘুড়ির
কষ্ট পেয়েছে অবুঝ হৃদয় ক্লান্ত হয়েছে শরীর।
শূন্য নাটাই আমি বসে রই একলা মাঠের প্রান্তে
অনেক সময় ব্যয় করেছি মিথ্যে ঘুড়িকে জানতে।

রায়

শুধু একবার সময় দাও
আমি সারা রাত ধরে শোনাব ৬০টি কবিতা।

গত দুটি মাস ধরে তিলে তিলে গড়েছি আমি ওদের
কখনো হৃদয়ে রক্তক্ষরণের বেদনা নিয়ে
কখনো ঝরনা ধারার মত ছন্দময় হাসির সুখ নিয়ে।

শুধু একটি কন্ঠে
শুধু একজন শ্রোতার জন্য
শুধু একবারই আবৃত্তি করা হবে ওদের।

সেই রাতের পর
তুমি সিদ্ধান্ত নেবে
এই কবিতাগুলো বেঁচে থাকবে কিনা।
তুমি চাইলে
তাদের মৃত্যুদন্ড দিতে পার,
দেশলাইয়ের আগুনে পুড়ে
আমি নিজ হাতে তোমার রায়
কার্যকর করবো।

আর তোমার দয়া হলে,
ওদের জন্য তোমার করুণা হলে
তুমি ওদের আশ্রয় দিতে পার একজন প্রেমিকার হৃদয়ে,
যতদিন তুমি চাইবে, ওরা থাকবে।
তোমার স্মৃতির ঘরে সুখের আধার হয়ে
তোমার নির্জন সময়ের সাথী হয়ে
ওরা চিরটাকাল থাকবে শুধু তোমার জন্য।

আমার কবিতাগুলো তৈরি।
তোমার কখন সময় হবে, বলো,
আমি সারা রাত ধরে শোনাব ৬০টি কবিতা।