প্রিয়মুখ

হাতের উপর মুখটি রেখে কার কথা তুই ভাবছিস,
কোন প্রিয়মুখ স্মরণ করে আঁখীনীরে ভাসছিস?

কোন স্মৃতিরই বেদনাতে নীল হয়েছে বুক?
নিত্যহাসি মানুষটার আজ মনে শুধুই দুখ!

তোর কথাও একইভাবে পড়ে কি তার মনে?
সজল চোখে তাকায় কি সে দূর পৃথিবী পানে?

হঠাৎ করে যখন তখন সেও কি যায় বিগড়ে
জোছনা আলো যখন পড়ে তার বিছানায় ঠিকরে?

নদীর পাশে দাড়ালে কি তার হৃদয় ওঠে কেঁপে
বুঝতে পারে? দুটো চোখের অশ্রু যায়নি থেমে?

কখনো কি সে বুঝতে পারে হারিয়ে ফেলার দুঃখ?
হারিয়ে যাওয়ার জীবনটাও কি একই রকম রূক্ষ!

ভাবিসনে আর ওর কথা ও একলা নেই আর এখন
আরো অনেক শিশুর সাথে খেলছে যখন তখন।

পরীরা তারে ঘুম পাড়ায় তোর গাওয়া সব গানে,
ওর সব যে তোর মত চাই, ওরা সেটা জানে।

স্বপ্নে কেবল দেখে সে তোর গভীর দু চোখ দৃষ্টি,
আজ সে জানে, ঐ দুটি চোখ কে করেছে সৃষ্টি।

আপরাধবোধ

পেছন ফিরে দেখি শুধু পাপের পর পাপ
একদিন দুদিন নয়, অনেক বছর ধরে জমিয়েছি।
ভালোমানুষটি হয়ে প্রকাশ্যে যত পূণ্য কামিয়েছি
অন্ধকারে নিজের প্রকৃত রূপে খুইয়েছি তার চেয়ে ঢের বেশী।

মাঝে মাঝে হঠাৎ ভেতরের সত্যিকার ভাল বোধটা
মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চায়। তখন মনে মনে শপথ করি
এরপর ঠিক ঠিক ভাল হয়ে যাব। দুদিনও যায় না,
শপথ ভেঙ্গে আবার নিজের রূপে ফিরে আসি।

এখন অবধি সব গোপন রেখেছি, কেউ জানে না।
তবে পাপ চিরদিন গোপন থাকে না। ঠিক জানি,
একদিন সব প্রকাশিত হয়ে যাবে সব
আমার বিশুদ্ধ ভাবমূর্তিতে তখন পড়বে পীচকালো প্রলেপ।

তখন, আমার ভক্তরা, আমার শুভানূধ্যায়ীরা,
তখন যদি আমাকে, এই ভন্ড, বর্ণচোরা আমাকে
ঘৃণার আগুনে জালাতে ইচ্ছে হয়
তখন একবার শুধু এটাও ভেবো,
আমার আপরাধবোধ এতদিন আমাকে কম পোড়ায়নি।