Wednesday, October 3, 2007

দুই বছর (৩)

রাত প্রায় নয়টা হবে। আমরা উলমে পৌছে গেছি। আমার ডর্মে না গিয়ে উঠলাম টিটো ভাইর ডর্মে। ওমা! এতো দেখি জগন্নাথ হল! বাইরে ঝোপঝাড়। কয়েক যুগ আগে যে ডর্মটা রং করা হয়েছিল, তারপর তাতে শুধু শ্যাওলা আর ধুলোর আস্তর ছাড়া আর কিছু পড়েনি। আর রুমে রুমে কি রকম নোংরা কার্পেট। ডর্ম দেখে একটু অবাক হলাম।

কিছুক্ষণ পর একে একে উলমের সব বাংলাদেশীরা আসতে শুরু করলেন। সদা হাস্যোজ্জ্বল মঞ্জু ভাই এবং এজাজ ভাই এলেন। শুরুতেই হতাশার বাণী: উলমের সুবিধা একটা, থাকার খরচ কম! আমি মনে মনে বলি, একটা ইউনিভার্সিটিতে পড়তে আসলাম, আর আমারে বলে কিনা থাকা-খাওয়ার খরচ কম! তারপর বল্লেন, তুমি এই শহরে আসছো কেন? তখনও জানতাম না ওনার এই হতাশ কথাবার্তার কারণ। থিসিসের প্রবল চাপে ওনার তখন ত্রাহি মধুসূদন অবস্থা। সবকিছুকেই নেগেটিভলি নিচ্ছিলেন।

তারপর পরিচয় হলো হাসিব ভাইর সাথে। তিনি বেশ কিছু তথ্য এবং উপদেশ দিলেন। তবে এতোদিন পর উপদেশগুলো আর মনে থাকার কথা নয়।

একটু পর শুনলাম সুজন ভাই নামছেন চারতলা থেকে ভাবীকে নিয়ে। আমি ভাবলাম জার্মান ভাবী দেখা হবে এবার; তা অবশ্য হলো না; বাংলাদেশী ভাবীর সাথে দেখা হলো।

এইতো, মোটামুটি এই আমরাই ছিলাম তখন উলমে। খাওয়া দাসয়া হলো। এই বিশাল বিশাল মুরগীর রান, আর সাথে খিচুড়ী। তারপর লিডলের লেমন ড্রিংক। যা হয়েছিল না খাওয়াটা!

খাওয়ার পর দেখা গেল, বাসের সময় হয়ে গেছে। সবাই মিলে জিনিস পাতি নিয়ে আমরা দৌড় দিলাম সেদিকে, গিয়ে দেখি অল্পের জন্য বাস মিস। তাই সেই রাতের মত থেকে গেলাম গুটেনবার্গ স্ট্রাসেতে। এজাজ ভাইর বাসা থেকে ফোন করলাম আমার বাসায়, জানালাম ভাল আছি, পৌঁছেছি ঠিকঠাক মত।

সকালে উঠে ঐ বাস ধরে চলে গেলাম হায়েলমায়ারস্টাইগেতে আমার ডর্মে। সমতলে শহর, পাহাড়ের মাঝে হায়েলমায়ারস্টাইগে, আর চূড়াতে ইউনিভার্সিটি। ঝকঝকে তকতকে ডর্ম, চার জনের অ্যপার্টমেন্ট। বাসায় জিনিসপাতি রেখে চলে গেলাম ইউনিভার্সিটিতে। টিটো ভাই পৌঁছে দিলেন কো-অর্ডিনেটর রাইমারের অফিসে।

No comments: